ধর্ষক সৎবাবার লোকজনের চাপের মুখে এবার বাড়ি ছাড়া হলো ধর্ষিতা ১০ বছরের শিশু ও তার মা। নওগাঁয় নরপশু পিতা কর্তৃক ১০ বছর বয়সের সৎকন্যাকে হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে দীর্ঘ ৫/৬ মাস ধরে ধর্ষণ করার ঘটনায় এলাকার লোকজনের মাঝে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হলেও গত ৮ দিনেও এব্যাপারে অজ্ঞাত কারণেই কোন মামলা হয়নি বা করেননি ধর্ষিতা শিশুটির মা।
অপরদিকে, থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসার পরও ঘটনার নায়ক আনিছুর রহমান পলাতক থাকায় তাকে আটক করতে পারেনি। এরমধ্যেই আনিছুরের লোকজন ধর্ষিতা শিশু ও তার মাকে মামলা না করার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামের কয়েকজন জানিয়েছেন। ধর্ষকের লোকজনের চাপের মুখে মা ও মেয়ে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন গ্রামের লোকজন।
ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার নওহাটামোড় পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার খোর্দ্দনারায়নপুর নিচপাড়া গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে শিশু কন্যাকে সৎবাবা ধর্ষণ করে আসলেও ঘটনাটি প্রকাশ পায় গত ২৫ শে জুন।
ধর্ষণের শিকার শিশুটি জানায়, আমার সৎবাবা আনিছুর রহমান আমার মাকে বিয়ে করার পর থেকেই মা কাজে বাইরে গেলে আমার শরীরের কাপড় খুলে আমার সাথে খারাপ কাজ শুরু করেন, আমি ঘটনাটি মাকে জানাতে চাইলে আমাকে হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি দেওয়ার কারণে আমি মা বা কাউকে কিছুই বলিনি। একদিন আমাকে নওহাটামোড় বাজারে নিয়ে যেয়ে রাত হওয়ার পর বাসায় ফেরার পথে পাটের খেতে আমার সাথে খারাপ কাজ করেছে তবুও আমি ভয়ে নীরব ছিলাম।
শিশুটি আরো জানায়, সম্প্রতি আমার মা আমাকে বাড়িতে সৎবাবার কাছে রেখে নানার বাড়িতে যায়। এসময় সৎবাবা বাড়িতে আমাকে একা পেয়ে আমার সাথে নোংরা কাজ করতে থাকলে আমি সহ্য করতে না পেরে সুযোগ বুঝে বাড়ি থেকে বাইরে চলে আসি। পরে আমার মা বাড়িতে আসলে মাকে সব ঘটনা বলে দেয়ায় মা ওই নরপশু সৎবাবাকে গালিগালাজ করে। এসময় সৎবাবা ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য মা ও আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের থাকার ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আমরা তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করি।
ঘটনাটি নিয়ে গত মঙ্গলবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পরই মহাদেবপুর থানার নওহাটামোড় ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটির মুখ থেকে বিস্তারিত ঘটনা শুনে ও সত্যতা পেয়ে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করাসহ তার মা বানু বেগমকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দিলেও এখন পর্যন্ত শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি বা থানায় কোন মামলা করেননি শিশুটির মা।
এব্যাপারে নওহাটামোড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মামুন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির মুখ থেকে ও তার মায়ের কাছে থেকে সম্পূর্ণ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এব্যাপারে কয়েকবার অভিযান চালিয়েও পালিয়ে থাকায় সৎবাবকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরো বলেন, শিশু নির্যাতনকারী স্বামীকে বাঁচাতেই শিশুটির মা বানু বেগম শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করেননি এবং এব্যাপারে এখনো থানায় কোন মামলা করেননি। শিশু বা শিশুটির মাকে কেহ ভয়ভীতি দেখিয়ে অজ্ঞাত স্থানে পাঠিয়েছেন কিনা না সে বিষয়টি ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সেই সাথে সৎবাবাকে আটকের চেষ্টাও অব্যাহত আছে।